শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নয়, গ্রাম-গ্রামান্তরে এখন গুজব ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। আর এই গুজবগুলো যেন মানুষ বিশ্বাস করে, সেজন্য গুজবগুলোকে ত্বরান্বিত করার প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, বিএনপি- জামায়াতের একটি বিশেষ টিম সারাদেশে গুজব ছড়ানোর দায়িত্ব নিয়েছে এবং এই গুজব ছড়ানোর ক্ষেত্রে বিএনপি – জামায়াতের নেতারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যেমন ব্যবহার করছেন, তেমনি ব্যবহার করছেন ব্যক্তিগত যোগাযোগকেও।
আরও পড়ুন : লোডশেডিংকে পুঁজি করে বিএনপি গুজব ছড়াচ্ছে
সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থায় কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দীর্ঘ এক যুগ পরে আবার লোডশেডিং ফিরে এসেছে। লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষের সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য এবং মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে দেয়ার জন্যই গুজব গুলো ছড়ানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন : সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হওয়ায় ❛ধর্মীয় কার্ড❜ খেলছে বিএনপি-জামায়াতের গুজব সেল
সাম্প্রতিক সময়ে একটি এলাকায় গুজব ছড়ানো হয় যে, মসজিদে বিদ্যুৎ থাকবে না। এই গুজব ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে মুসল্লিদের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়া হয়। স্থানীয় একজন আওয়ামী লীগ নেতা বিষয়টি জানেন এবং তারপর তিনি সাথে সাথে মসজিদে চলে যান। যাওয়ার পর তিনি মুসল্লিদের সাথে কথা বলেন এবং জানান যে, মসজিদে বিদ্যুৎ থাকবে না এরকম কোন নির্দেশনা সরকারের পক্ষ থেকে নেই। পরবর্তীতে তিনি খবর নিতে চেষ্টা করেন যে, কারা এই গুজবটি ছড়ালো। খবর নিয়ে দেখেন যে, স্থানীয় বিএনপির একজন পলাতক নেতা টেলিফোনে কয়েকজন মুসুল্লিদের বলেছেন যে মসজিদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে।
এরকম স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে গুজব ছড়ানোর নজিরটি শুধু এলাকাভিত্তিক নয়, দেশব্যাপীও হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপি- জামায়াত নিয়ন্ত্রিত সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে প্রতিনিয়ত গুজব ছড়ানো হচ্ছে। বাংলাদেশের ডলার পরিস্থিতি নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেয়া হচ্ছে, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো হয়ে যাচ্ছে এমন তথ্য দেয়া হচ্ছে, জ্বালানি তেল থাকবে না এমন তথ্য দেয়া হচ্ছে।
[দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি-জামায়াত এবং কিছু পত্রিকা পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়াচ্ছে]
সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলো একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যাতে তারা বলেছে যে ট্রাস্ট ফিলিং স্টেশনে ৪০০ টাকার বেশি মোটরসাইকেলে তেল দেওয়া হচ্ছেনা এবং ব্যক্তিগত গাড়িতে ৩ হাজার টাকায় বেশি তেল দেওয়া হচ্ছে না। এবং পরবর্তীতে এই খবরটিকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় জামায়াত এবং সেখানে ট্রাস্ট পেট্রোল পাম্পের কথা শুধু থাকেনি, পুরো বাংলাদেশেই করা হয়েছে বলা হয় এবং গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় যে জ্বালানি তেলের তীব্র সংকট।
পরবর্তীতে যখন বিপিসির চেয়ারম্যান এর তীব্র প্রতিবাদ করেন তখন প্রথম আলোর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করা হয়নি। আর জামায়াত নিয়ন্ত্রিত সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মগুলো থেকেও খবরটি উঠানো হয়নি। অর্থাৎ সুনির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য নিয়েই জামায়াত পরিকল্পিতভাবে গুজবগুলো ছড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন : দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থেকেও থেমে নেই বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, গুজব ও অপপ্রচার
সাম্প্রতিক সময়ে এই প্লাটফর্মগুলোর দিকে খেয়াল রাখলে দেখা যায় যে, ডলার সংকট নিয়েও তারা গুজব ছড়িয়েছে এবং ডলার নেই, এই ধরণের প্রচারণার মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে ডলারের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছে, জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রেখেছে। এসব গুজবের প্রধান লক্ষ হলো জনগণের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি করা, জনগণ যেন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সেই চেষ্টা করা। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এরকম গুজব ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে। সরকার বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল এবং এ ধরনের গুজবগুলো যারা ছড়াচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সরকার যথাযথ ভূমিকা নেবে।
আরও পড়ুন :