২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল জাতীয় নির্বাচন। সেসময় নিজেদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ঘুচানোর জন্য নির্বাচনকে ঘিরে এমন কোনও ষড়যন্ত্র নেই যা করেনি বিএনপি। নির্বাচনের আগের রাতেও ২০০১ সালের মতোই বিভিন্ন কেন্দ্রের অর্ধশত প্রিজাইডিং অফিসারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দলটি। এরপরও শেষ রক্ষা হয়নি। গো হারাভাবে হেরেছিলো তারা।
আর এই হারের জ্বালা মেটাতেই সন্ত্রাসের রাজত্ব শুরু করে খালেদার সন্ত্রাসী বাহিনী। খালেদা জিয়া ও বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে সেসময় হাজার হাজার যানবাহন ভাঙচুর করে তাতে আগুন দেয় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা।
সেসময় তাদের পেট্রোল বোমা, হাতে তৈরি বোমা এবং অন্যান্য সহিংসতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২০ সদস্যসহ ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। সহিংসতার সময় রাস্তার পাশে থাকা হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলেছিল জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা। এছাড়া, ছোট দোকান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতেও আগুন দিয়েছিল তারা।
তথ্যসূত্র বলছে, ২০১৪ এর নির্বাচনের দিন একজন প্রিজাইডিং অফিসারসহ মোট ২৬ জনকে হত্যা করে এবং সারাদেশে ৫৮২টি স্কুলে ভোটকেন্দ্রে আগুন লাগায় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা।
২০১৫ সালে নির্বাচনের এক বছর পূর্তির দিন খালেদা জিয়ার নির্দেশে আবারও জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে বিএনপি-জামায়াত জোট। সেসময় ২৩১ জনকে হত্যা করে তারা।
যাদের বেশিরভাগই পেট্রোল বোমা এবং আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যায়। ওই ঘটনায় আহত হন আরও ১ হাজার ১শ’ ৮০ জন। সেসময় ২,৯০৩টি গাড়ি, ১৮টি রেলগাড়ি এবং ৮টি যাত্রীবাহী নৌযানে আগুন লাগিয়ে হামলা চালায় তারা। ওই সময় হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় সরকারি অফিসগুলো। আর বিএনপি-জামায়াতের ভাঙচুর এবং আগুনে পুড়ে ৬টি ভূমি অফিসসহ ৭০টি সরকারি কার্যালয়ের দলিল-দস্তাবেজ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ বিএনপি জামায়াত আমলের যত ধর্ষণ
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মতে, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতাল-অবরোধের প্রতিটি দিন দেশের ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা (অথবা ১৯২.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বা জিডিপি’র ০.২ শতাংশ ক্ষতি হয়। এর অর্থ ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধে দেশের ১.৫৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থক্ষয় হয়। তবে সহিংসতার ক্ষয়-ক্ষতি এতে অন্তর্ভুক্ত নয়। অংকের হিসেবে সেই অর্থের পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকারও বেশি।
এ ব্যাপারে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিভুরঞ্জন সরকার বলেন, বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক সহিংসতা ভোলেনি দেশবাসী। তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে দেশ হয়ে উঠেছিল আতঙ্কগ্রস্ত। এমন একটি দলের নীতিবোধ নিয়ে দেশের মানুষ ওয়াকিবহাল। সঙ্গত কারণেই বিএনপি-জামায়াতের মতো একটি সন্ত্রাসী দলকে দেশের জনগণ মেনে নেয়নি। জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে রাজনৈতিক আদর্শ বিবর্জিত এই দলটিকে।
আরও পড়ুনঃ