হঠাৎ আঙুল ফুলে কলা গাছ আরাভ খান। আজ থেকে পাঁচ বছর আগে যার পরিচয় ছিলো ভাঙারি ফেরিওয়ালার সন্তান। তিনি এখন বিশ্বের অন্যতম একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। বুর্জ খলিফায় তার ফ্ল্যাট। অতিথি আপ্যায়নের খাবারে থাকে মায়া হরিণ। আর অতিথি হিসেবে আসেন নামি দামি সেলিব্রেটি।
আরও পড়ুন : অভিযোগের পাহাড় জমে আছে তারেকের বিরুদ্ধে! আসলেই গ্রেফতার।
প্রশ্ন ওঠে, আরাভের পকেটে এতো টাকা কিভাবে এলো? এ বিষয়ে আরাভ খানকে একাধিকবার প্রশ্ন করা হলেও তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। আরাভ খানের অর্থের উৎস সম্পর্কে ফেসবুকে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী মারফত গুজব ছড়ানো হয়, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ নাকি এই আরাভ খানকে অর্থ প্রদান করতেন।
যেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে আখ্যায়িত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন স্বয়ং বেনজীর আহমেদ। সঙ্গে লাইভে আরাভ খান নিজেও বলেন, তার কাছে থাকা টাকার মালিক বেনজীর আহমেদ নয়। তিনি কখনো তাকে দেখেনন নি।
প্রশ্ন জাগে, তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে বলা হলো, আরাভের অর্থের উৎসে বেনজীর জড়িত। এমন তথ্য ছড়ালো কে? আরাভ এবং আইজিপি বেনজীর আহমেদের কথার রেশ ধরে অনুসন্ধানে নামে বিএনপি নিউজ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কানাডা থেকে চালিত নাগরিক টিভি নামক এক বেনামী প্রতিষ্ঠান সর্বপ্রথম এমন ভিত্তিহীন তথ্য রেফারেন্স ছাড়া ছড়িয়ে দেয়।
যেখানে বলা হয়, বেনজীর-হারুন দ্বন্দ্বের বলি আরাভ খান। আর বেনজির আহমেদ নাকি আরাভ খানকে স্বর্ণের জন্য ইনভেস্ট করে। যদিও এমন তথ্যের ক্ষেত্রে তারা কোনো প্রমাণ ব্যবহার করেনি। শুধু একজন ডিজাইনার দিয়ে পোস্টার বানিয়ে ছড়িয়ে দেয়া হয় ফেসবুকে।
তবে অনুসন্ধান বলছে ভিন্ন কথা। নাইকো দুর্নীতি থেকে তারেক রহমানের ১ হাজার কোটি আত্মসাতের পর, সেই টাকা দুবাইয়ে পাচার করা হয়। ২০০৬ সাল থেকে সে টাকার দেখাশোনাসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করার দায়িত্ব পেয়েছিলেন তৎকালীন দুবাই বিএনপি নেতা মোহাম্মদ নুরুল আলম। যিনি পরবর্তীতে দুবাই বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে এই নুরুল আলমের নির্দেশেই পুলিশের বিশেষ শাখার কর্মকর্তা মামুন ইমরানকে খুন করেন আরাভ খান। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে এই আরাভ খানকে দুবাই নিয়ে আসেন বিএনপি নেতা নুরুল আলম।
দুবাই নিয়ে গিয়ে সে দেশে অবস্থিত তারেক রহমানের হাজার কোটি টাকার সকল ব্যবসা আরাভকে বুঝিয়ে দিতে থাকেন নুরুল আলম। এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২০২১ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকাল চারটায় আমিরাতের রাস আল খাইমার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন দুবাই বিএনপির সভাপতি ও দুবাই কেন্দ্রিক তারেক রহমানের ব্যবসা সামলানো নেতা নুরুল আলম।
[আরাভ খানের টাকা বেনজীরের নয়, তারেক রহমানের]
এরপর থেকে দুবাইয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তারেক রহমানের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার ব্যবসার পুরোটার নিয়ন্ত্রণ পেয়ে বসেন আরাভ খান। আর মুহূর্তের মধ্যেই ফেরিওয়ালার ছেলে হয়ে যায় হাজার কোটি টাকার মালিক।
আরাভ খানকে নিয়ে আলোচনা শুরু হবার পর, তারেক রহমানের মনে বিষয়টি নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। এসময় নাগরিক টিভির সঙ্গে কথা বলে, বিষয়টি বেনজির আহমেদের দিকে ঘুরানোর জন্য নাগরিক টিভির মালিক টিটোকে নির্দেশ দেন তারেক। সে অনুসারে কাজ হয়। এবং বেনজীর আহমেদ আরাভ খানকে অর্থায়ন করেছে এমন সংবাদ ভাইরাল করানো হয়। যার মাধ্যমে অর্থ প্রদান করার পরও লোকচক্ষুর আড়ালে পুরোপুরি চলে যেতে সক্ষম হন তারেক। ফলে খেলাও জমে যায় আর এরপর আরাভ ইস্যুতে ফায়দা লুটায় ব্যস্ত তারেক রহমান ও তার দল বিএনপি।
আরও পড়ুন :