প্রধান দুই নেতা অযোগ্য তাই যে কোনো মূল্যে নির্বাচন বানচালই বিএনপির লক্ষ্য

0
312
নেতা

আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দুজনই আইনের দৃষ্টিতে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অযোগ্য। খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজানির্বাচন বর্জন ভুগছেন, আর যার নেতৃত্বে বিএনপি সুসংগঠিত বলে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল দাবি করেন, সেই তারেক রহমান হলেন দুর্নীতির বরপুত্র, দণ্ডিত পলাতক আসামি। রাজনীতি না করার শর্তে যিনি মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে পালিয়েছেন; তারা এই দলের সর্বোচ্চ পদ আঁকড়ে আছেন অপরাধী হওয়া সত্ত্বেও।

দণ্ডিত অপরাধীদের পদে বসিয়ে রাখতে বিএনপির গঠনতন্ত্রও পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেই বিএনপি নির্বাচন নিয়ে নানা তালবাহানা করছে। আগে তাদের বিরোধিতা ছিল ইভিএম নিয়ে। পরে যখন সরকার ইভিএম ইস্যু থেকে সরে আসে, তখন তারা হতাশ হয়ে পড়ল, কারণ তারা আশা করেনি সরকার এভাবে ইস্যুটা ছেড়ে দেবে।

এরপর নতুন দাবি তুললো বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের, যে দাবি আগেই আদালত কর্তৃক মিমাংসিত ও বাতিল করা হয়ছে। সরকার সংবিধান রদ করবে না জেনেই এ নিয়ে গোঁ ধরে আছে বিএনপি। নানারকম কর্মসূচি, সভা-সমাবেশ করছে, দফা ঘোষণা করছে। তবে সবকিছুর পেছনে উদ্দেশ্য একটাই, নির্বাচন বানচাল করা। কারণ নির্বাচনে যদি যায় বিএনপি, কে নেতৃত্ব দেবে? জয়ী হলে কে হবে প্রধানমন্ত্রী? কোনো জবাব নেই। প্রধান দুই ব্যক্তির হাতে কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছিল দলকে, যা থেকে বেরোতে পারেনি তারা। নির্বাচনে গেলে তাই বিকল্প কাউকে সামনে রাখতে হবে। অথচ তেমন বড় ইমেজের কেউই নাই দলে।

আরও পড়ুনঃ  মুচলেকার নামে খালেদাকে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিলেন ফখরুল

মির্জা ফখরুলকে কি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেবে নেতাকর্মীরা? কখনই না। এটা ফখরুল নিজেও জানেন। অগত্যা দল টিকিয়ে রাখতে এবং কর্মী-সমর্থকদের ধরে রাখতে নির্বাচনে অংশ না নিলেও বিএনপির সামনে দলীয় কর্মসূচির নামে নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে অরাজকতা তৈরি করা ছাড়া বিকল্প পথ নেই। যে কোনো মূল্যে তারা এ কাজটি করতে বদ্ধ পরিকর।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করাই তাই বিএনপির এখন কৌশলগত প্রধান লক্ষ্য। download (1)বিএনপির থিংক ট্যাংকের ধারণা, নির্বাচন বানচাল করতে পারলে হয়ত সরকারের পতন ঘটবে। তাতে তাদের ক্ষমতায় যাবার পথ কোনো না কোনোভাবে প্রশস্ত হবে। বিএনপির নেতারা বুঝতে পারছেন, এভাবে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। কারণ যে দাবি গণদাবিতে রূপ নেয় না, তাতে জনগণ সমর্থন দেয় না। তাই যেকোনো মূল্যে নির্বাচন বানচালই তাদের প্রধান রাজনৈতিক কৌশল।

বিএনপির নেতারা প্রকাশ্যে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে হুমকি দিচ্ছেন, নির্বাচন করতে দেয়া হবে না বলে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে এটা স্পষ্ট, পরে কী হবে দেখা যাবে। নির্বাচন যদি সরকার সংবিধান অনুসারে অনুষ্ঠিত করে, সেখানে বিএনপির জয়ের সম্ভাবনা শূন্য। মার্কিন ভিসা নীতি অনুযায়ী যদি কোনো রাজনৈতিক দল অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করে তাহলে সেই দল বা ব্যক্তি দেশটির ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। তবুও বিএনপির হুমকি-ধমকি চলছে। তারা ভাবছেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তাদের পক্ষে আছেন, তিনিই তাদের ত্রাণকর্তা।

নিজেরা নির্বাচনে যাচ্ছে না, কাউকে নির্বাচন করতেও দেয়া হবে না- বিএনপির এমন আত্মঘাতী পরিকল্পনার পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। প্রধান কারণ, জিয়া পরিবারের কেউ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারছে না। এটি বিএনপির জন্য দুঃসংবাদ। নির্বাচনে যদি বিএনপি জয়ীও হয় তবুও জিয়া পরিবারের কর্তৃত্ব থাকছে না। তাই তারেক বা খালেদা কেউই বিএনপিকে নির্বাচনের পথে নিতে রাজি নন। এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মিমাংসিত ইস্যু। সরকারও এই দাবি মানবে না, তা বিএনপি জানে।

[প্রধান দুই নেতা অযোগ্য তাই যে কোনো মূল্যে নির্বাচন বানচালই বিএনপির লক্ষ্য]

তবুও তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেয়া হয়, সরকার দাবিটা মেনে নিচ্ছে, তবুও বিএনপি কোনো না কোনো বাহানা বের করবে। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারে নিরপেক্ষ দায়িত্বশীল হবেন কারা? যতক্ষণ না বিএনপির সুরে গান করছেন কেউ, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে নিরপেক্ষ বলে মেনে নেবে না বিএনপি। আর বিএনপি ভালো করেই জানে, সরকার তাদের এসব নাটককে প্রশ্রয় দেবে না। তাই বিএনপি নির্বাচনে যেতে আগ্রহী নয়।

বিএনপি এখন সাংগঠনিকভাবে অনেকটাই দুর্বল। জেলায় জেলায় কমিটি নিয়ে চলছে মারামারি,কামড়া-কামড়ি, গোলাগুলি, ঝাড়ু মিছিল, পদবঞ্চিতদের হামলা। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে গেলে বিএনপির জন্য ভরাডুবি ছাড়া আর কিছুই প্রাপ্তি নেই। তাছাড়া বিএনপির রাজনীতি থেকে যোগ্য ব্যক্তিরা সরে দাঁড়াচ্ছেন। যারা টিকে আছেন, তারা কেউই ক্যারিশমাটিক নেতা নন। অযোগ্য নেতা নিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সম্ভব নয় বিএনপির পক্ষে। বরং এমন ভরাডুবি ঘটলে বিএনপির অস্তিত্বই মুছে যাবে। কর্মী সমর্থকদের কাছে দলের ইমেজ বলে কিছুই থাকবে না। তাই নির্বাচন বানচাল করা ছাড়া বিকল্প নাই বিএনপির।

 

আরও পড়ুনঃ  

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here