মেট্রোরেলকে অপ্রয়োজনীয় শ্বেতহস্তী বলে বিএনপি | জনজীবনে মেট্রোরেলের প্রভাব কেমন?

0
292
মেট্রোরেল

মেট্রোরেলের প্রকল্পের শুরু থেকেই বিএনপি নেতারা এবং তাদের ভাড়াটে বুদ্ধিজীবীরা টিভি টকশোতে, পত্রিকায় কলাম লিখে দাবি করেছিলেন ঢাকা শহরের গণপরিবহন খাত ঠিকঠাক চালালেই মেট্রোরেলের প্রয়োজন হতো না, এটা একটা শ্বেতহস্তী, যার কুফল ভোগ করবে পুরো জাতি। মেট্রোরেলে যানজট সমাধান হবে না। এটা একেবারেই অপ্রয়োজনীয় একটি পরিকল্পনা। আসলেই কি তাই? আসুন মেট্রোরেল এবং বাসের তুলনামূলক যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা বিবেচনা করা যাক।

আরও পড়ুন : প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছে বিএনপি, পদ্মাসেতুকে টয়লেটের সাথে তুলনা রুমিনের

ডাটা অনুসারে দেখা যায়, মেট্রোরেলের ছয় কোচের একসেট ট্রেনের প্রতি ট্রিপে ভ্রমণ করেন গড়ে ২,৩০৮ জন যাত্রী। প্রতি ১০ মিনিট পর পর একসেট ট্রেন হিসেবে ঘণ্টায় চলছে ৬ ট্রিপ, ৪ ঘন্টায় ২৪ ট্রিপ। অর্থাৎ ৪ ঘণ্টায় মোট যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে ২৪ X ২,৩০৮ = ৫৫,৩৯২ জন। এটা হলো ধারণক্ষমতা অনুযায়ী মেট্ররেলে ওয়ানওয়ে বা আপ ট্রিপে যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা।

যদি ৪ ঘণ্টার চেয়ে এই ট্রিপ বর্ধিত হয়, তবে যাত্রী পরিবহন বাড়বে আরও অনেক বেশি। উত্তরা টু মতিঝিল আপ-ডাউন ট্রিপ শেষ করতে একসেট ট্রেনের যদি ৩১+৩১ = ৬২ মিনিট লাগে, সে হিসেবে ৬ সেট ট্রেন চললে আপ-ডাউন যাত্রা শেষ করে প্রতি ১০ মিনিটে একসেট করে ট্রেন তার পরবর্তী আপ ট্রিপের জন্য পুনরায় কিউতে চলে আসতে পারে।

আরও পড়ুন : সরকারের চলমান মেগা প্রকল্পের সফলতা দেখে নানাভাবে বিভ্রান্তি ছড়াতে মরিয়া মির্জা ফখরুল

অন্যদিকে প্রতি ১০ মিনিটে ১টা বাস যদি ১০০ যাত্রী বহন করে, তবে এই হিসেবে ৫৫,৩৯২ জন যাত্রী পরিবহন করতে লাগবে বাসের ৫৫৪ ট্রিপ। গতি বিবেচনায় ভ্রমণ সময় কমপক্ষে দেড় ঘন্টা ধরলে এবং বিরতি না দিলে একটি বাসের আপ-ডাউন ট্রিপ শেষ করতে সময় লাগবে ৩ ঘন্টা। সেই হিসেবে ১০ মিনিটে ২,৩০৮ জন যাত্রী বহনে লাগবে ২৩টি বাস, প্রতি ঘন্টায় ১৩৮টি এবং ৩ ঘন্টায় ৪১৪টি বাস। ৩ ঘন্টার মধ্যে যদি প্রথম ট্রিপের বাসগুলো ফিরে আসতে শুরু করে, তবে আর নতুন বাস দরকার হবে না।

আরও পড়ুন : মির্জা ফখরুলের হাজার লক্ষ কোটির মিথ্যাচার, তথ্যসূত্র চাইলেই মুখ বেজার!

এখন আপ-ডাউন ট্রিপ মিলে ৪ ঘন্টার টাইম ফ্রেমে ২০৭ + ২০৭ = ৪১৪টি বাসের চাপ যদি সড়কে না থাকে, আর নিদেনপক্ষে ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াতকারী ৩% যাত্রীও যদি মেট্রোরেল ব্যবহার করে, তবে ঢাকা শহরে যানজট একেবারে নিরসন না হলেও সহনীয় পর্যায়ে আসতে বাধ্য। মেট্রোরেলের মাত্র একটি লাইন চালু করা হয়েছে, তাও আবার পূর্ণভাবে সারাদিন এখনো সার্ভিস দিচ্ছেনা, ধীরে ধীরে ট্রিপ সংখ্যা ও স্টেশন বাড়ানো হচ্ছে। মেট্রোরেল প্রকল্পের ৬টি লাইনের সবগুলো স্টেশন চালু হয়ে গেলে দৈনিক ৪৭ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে বলে সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে।

[মেট্রোরেলকে অপ্রয়োজনীয় শ্বেতহস্তী বলে বিএনপি | জনজীবনে মেট্রোরেলের প্রভাব কেমন?]

তাহলে যারা বলে মেট্রোরেল অপ্রয়োজনীয় কিংবা শ্বেতহস্তী, তারা মূলত ঢাকা শহরের যানজট নিরসনের পক্ষে নন কিংবা সরকারের বিরোধিতা করার জন্য অহেতুক বিরোধিতা করছেন।

আরও পড়ুন :

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here